রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তার স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ওই গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অপরাধে তার শ্বশুরকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বর্ধনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা (২৮) ও তার বাবা আবুল কালাম (৫০)। আদালত কালামকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করেন। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও তিনমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া গোলাম মোস্তফাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামসুন্নাহার মুক্তি এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রায় ঘোষণার সময় দুই আসামিই আদালতের কাঠগড়ায় হাজির ছিল। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামি গোলাম মোস্তফা প্রায়ই তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। আর তার বাবা আবুল কালাম তার ছেলের বউকে কুপ্রস্তাব দিতো। ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আবুল কালাম তার ছেলের বউকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

এ ঘটনার পর সেদিনই শিশু ছেলেকে নিয়ে গৃহবধূ বাবার বাড়ি চলে যায়। পরে মাঠে কাজ শেষে সন্ধ্যায় গোলাম মোস্তফা তার মায়ের কাছে এসব বিষয় জানতে পারে। এরপর রাতেই সে শ্বশুরবাড়ি যায়।

শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার নামে গোলাম মোস্তফা তাকে বাড়ির পাশের আরেকটি নির্মাণাধীন বাড়িতে নিয়ে যায়। ফাঁকা এই বাড়িতে সে গৃহবধূর গলা টিপে ধরে। এ সময় পরিবারের সদস্যরা গৃহবধূর চিৎকারে সেখানে গেলে মোস্তফা পালিয়ে যায়। পরে গৃহবধূকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনার পর মোস্তফা বাড়ি গিয়ে তার বাবাকেও কুপিয়ে আহত করে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে মোস্তফার বিরুদ্ধে মামলা করেন গৃহবধূর বাবা। একই মামলায় গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে তার শ্বশুর আবুল কালামকেও আসামি করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আদালত বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণা করেন।